খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাকসুদ হেলালিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি গুরুতর অভিযোগ। কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কনস্যুলার অ্যাটাশে হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী আমিনুল হক পলাশ নামের এক প্রাক্তন কর্মকর্তা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ অভিযোগ প্রকাশ করেন।
গতকাল রাত ৯টা ৩০ মিনিটে দেওয়া পোস্টে তিনি দাবি করেন, “অবৈধ অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সচিবালয়ে তথাকথিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অবাধ বিচরণ শুরু হয়। তাদের তদ্বির, সুপারিশ ও নিয়োগবাণিজ্যের কারণে সচিবালয়ের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।”
তার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর সচিবালয়ে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, সেটি ছিল “ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো” এবং ঘটনাটির তদন্ত রিপোর্টে মিথ্যাচার করা হয় বলে তিনি দাবি করেন।
আমিনুল হকের অভিযোগ, “প্রফেসর ড. মাকসুদ হেলালী ওই অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে বলেন এটি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে ঘটেছে। এই ‘ভুয়া রিপোর্ট’-এর পুরস্কার হিসেবেই তাকে বুয়েটে পুনরায় শিক্ষক পদে এবং পরবর্তীতে কুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।”
অভিযোগকারী আমিনুল হক পলাশ বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কনস্যুলার অ্যাটাশে হিসেবে পরিচিত হলেও, মূলত তিনি দেশের একটি জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত সংস্থার কর্মকর্তা ছিলেন। সেখান থেকে ডেপুটেশনে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় যোগ দেন এবং একই বছরের মে মাসে ডিপ্লোমেটিক স্ট্যাটাস পান।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশে তাকে গত বছরের ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফেরার আদেশ দেওয়া হয়। যদিও তিনি দেশে ফেরেননি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় রয়েছেন। ২০২৫ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগের একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও তিনি বিতর্কিত বক্তব্য দেন।
এ বিষয়ে বুয়েট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মো. আফসার আলী বলেন,
“অবসর গ্রহণের পর পুনরায় বুয়েটে যোগ দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। প্রফেসর মাকসুদ হেলালী ২৫ ডিসেম্বরের পর বুয়েটে পুনরায় যোগ দিয়েছেন—এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাকসুদ হেলালী বলেন,
“আমি অবসরের পরে সরাসরি কুয়েটে যোগদান করেছি।”