ছবিঃ সংগৃহীত
চীনের এক দরিদ্র মা ছেলের স্কুলব্যাগে নিজ হাতে সেলাই করেছিলেন ফুলেল নকশার নাইকি লোগো। বহু বছর পর সেই ব্যাগের ছবি ভাইরাল হলে অবশেষে এগিয়ে এল নামী স্পোর্টস ব্র্যান্ড নাইকি। ছেলের পোস্ট দেখে মায়ের জন্য বিশেষ উপহার পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে তারা।
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শানসি প্রদেশের বাসিন্দা লিউ (২৩) চলতি মাসের ৯ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের জুনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের পুরোনো ব্যাগের ছবি পোস্ট করেন। ব্যাগটির লাল রঙের ওপর বড় করে আঁকা ফুলেল ডিজাইনের নাইকি ‘সোয়ুশ’ লোগো স্পষ্ট দেখা যায়।
লিউ জানান, স্কুলজীবনে তার অনেক সহপাঠীর কাছে আসল নাইকি স্কুলব্যাগ ছিল। কিন্তু একটি ব্যাগের দাম প্রায় ৩০০ ইয়ান (প্রায় ৪০ মার্কিন ডলার) হওয়ায় তা কিনতে পারেননি তার পরিবার। তাই তার মা, ঝাং (বর্তমানে ৫০), যিনি একজন দর্জি, নিজ হাতে ফুল-পাতা আর ভালোবাসা মিশিয়ে সেলাই করে বানিয়ে দেন অনন্য এই লোগো।
লিউ গর্বভরে বলেন, তিনি সেই ব্যাগ সবার কাছে দেখাতেন এবং বলতেন—এটি তার মায়ের সেলাই করা কাজ। ছোটবেলা থেকেই তার পোশাকও মায়ের হাতেই তৈরি হতো।
এখন অন্য শহরে কাজ করা লিউ পুরোনো ছবিটি ফোনে খুঁজে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হন এবং সেটিকে অমূল্য মনে করেন। তার পোস্টটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ৮৬ লাখ লাইক এবং ৫ লাখ মন্তব্য পড়ে তাতে।
অনলাইনে অনেকেই মায়ের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। কেউ বলেন, এটি ‘একক’ বিলাসবহুল আইটেম। আরেকজন মন্তব্য করেন, “এটাই আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর নাইকি লোগো।” কেউ কেউ তো নাইকিকে আহ্বান জানিয়েছেন “মাদারস সিরিজ” নামে নতুন কালেকশন বের করার জন্য।
অবাক করা ব্যাপার, নাইকি চায়নার অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট সরাসরি লিউয়ের পোস্টে সাড়া দেয়। তারা লেখেন, “অসাধারণ সেলাই করা লোগো। মায়ের ভালোবাসাই আমাদের সাহস দেয়—Just Do It।” একইসঙ্গে তারা লিউয়ের মাকে উপহার পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়।
যেখানে কেউ কেউ মজা করে বলেছিলেন, নাইকি হয়তো অনুমতি ছাড়া লোগো ব্যবহারের জন্য আইনজীবীর নোটিশ পাঠাবে, সেখানে লিউ জানান, তিনি ইতোমধ্যে মায়ের ঠিকানা কোম্পানিকে দিয়েছেন।
অনেকের কাছে ঘটনাটি মনে করিয়ে দিয়েছে ২০১৯ সালের ফিলিপিনো কিশোরী রিয়া বুলোসের গল্প। মাত্র ১১ বছর বয়সে মেয়েটি নিজের পায়ে টেপ মুড়ে তাতে হাতে আঁকা নাইকি লোগো এঁকে নেমেছিলেন ট্র্যাকে। সেই “হোমমেড নাইকি জুতো” পরে তিনি তিনটি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন।
#এম_এস